একমাত্র সত্যধর্ম কোনটি, এ বিষয়টি বুঝতে হলে, তাহলে প্রথমে বুঝতে হবে ঐ ধর্মের প্রবর্তক সর্বকালের, সর্বযুগের, সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, যেহেতু সেটি সত্য ধর্ম। আর সত্য ধর্মের প্রবর্তক হবে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ, কারণ এটি সত্য ধর্ম । আবার মানুষ সহ এ মহাবিশ্বের সমস্ত সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা আপনি যদি একজনকে মনে করেন (মহাসৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা একজন, এ বিষয়ে পরে লিখবো। নাস্তিক দিগকে অনুরোধ করি আপাতত এ বিষয় বাদে অন্য বিষয়গুলো বুঝতে চেষ্টা করুন), তাহলে তার মনোনিত ধর্ম হবে শুধুমাত্র একটি;এটিই যুক্তিযুক্ত। যেহেতু সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করবেন, আবার সে সৃষ্টিকে একাধিক ধর্ম দিয়ে ভেধাবেদ, হিংসা আর অশান্তিতে নিমজ্জিত রাখবেন এবং তাঁর ধর্মের প্রবর্তক দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম মানুষ হবে না; এটি কিন্তু কোনদিনই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। তাই সকল ধর্মাবলম্বীদের প্রতি আমার অনুরোধ, আসুন আমরা একটু জ্ঞান খাটাই, একটু চিন্তা করি কোন্ ধর্মটি সত্য এবং কোন্ ধর্মের প্রবর্তক শ্রেষ্ঠ। যেহেতু দুনিয়াতে একই সাথে একাধিক ধর্ম সত্য হতে পারে না। এজন্যে আপনার ধর্মটি সত্য কিনা তা বুঝার জন্য একটু জ্ঞান খাটানোর প্রয়োজন রয়েছে, যেহেতু দুনিয়াতে একাধিক ধর্ম একসাথে বিরাজমান। এ একাধিক ধর্মের মাঝে নিচ্ছয় একটি ধর্মই সত্য, বাকী গুলো মিথ্যা, তাই নয়কি? অনেকে বলে থাকেন, হিন্দুরাও বেহেশতে যাবে, খ্রিষ্টানেরাও যাবে, যে ধর্মেরই হোক ভালো মানুষ সবাই বেহেশতে যাবে, এখানে ধর্ম মুখ্য বা বিবেচ্য নয়; এ বিষয়ে এবং আসলেই দুনিয়ায় একাধিক বা বহু ধর্ম থাকতে পারে কিনা সে বিষয়ে ইনশা’আল্লাহু তা’য়ালা পরে ভিডিও দিবো ও প্রবন্ধ লিখবো; সে পর্যন্ত সাথে থাকবেন আশা করি। অতএব আসুন আমরা বুঝতে চেষ্টা করি ইসলামের নবী, হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা:) দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ মানুষ। আর এ বিষয়টি বুঝাতে বা আলোচনা করতে আমি সংক্ষেপে লিখবো ও বলবো। কারণ যে সত্যিই জানতে চাইবে, বুঝতে চাইবে তার জন্য প্রয়োজনীয় আলোচনার বাইরে অতিরিক্ত যুক্তির অবতারণা করার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। তাছাড়া আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে যে, আমি লম্বা ভিডিও দিই এবং এতে মানুষের ধর্যচ্যুতি ঘটে। তাই এখন থেকে আমি বিষয় অনুযায়ী পার্ট পার্ট করে ছোট ছোট ভিডিও দেয়ার চেষ্টা করবো। হযরত মুহাম্মদ (সা:) দুনিয়ায় শিশুকালে ও যৌবনকালে কতটুকু সামর্থের অধিকারী ছিলেন, আর তাঁর জীবন কতটুকু সাফল্যমন্ডিত হয়েছিলো; তা নিয়ে প্রথমে একটু চিন্তা করি। যেহেতু একজন মানুষের শ্রেষ্ঠত্য ও সাফল্যের বিষয়ে প্রথমে বুঝতে হবে, ঐ মানুষটির শিশু ও যৌবনকালে তার সামর্থ কী ছিলো বা আছে এবং তার সম্পর্কের সীমাবদ্ধতা কতটুকু। অর্থাৎ শারীরিক, আর্থিক, বংশীয়, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব ও পরিচিতজন তাদের অবস্থা কী রকম। যেহেতু শিশু ও যৌবন কালই হচ্ছে একজন মানুষের সাফল্যের মূল ভিত্তি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় ভর্তি না হয়ে; যদি কেউ স্নাতকোত্তর, এমফিল আর পি এইচ ডিগ্রী পাশ করতে পারে বা এ ধরনের অসাধ্য সাধন করতে পারে, তবে সেটি ভাববার আর গবেষণার বিষয়; কিন্তু নিয়মিত লেখাপড়া করে ধাপে ধাপে এ ডিগ্রী অর্জন করলে বা নিয়মতান্ত্রিক ভাবে কোন কিছু প্রাপ্ত হলে, সেখানে মহাসাফল্যের বা অলৌকিকতার কিছু থাকতে পারে না।
আসুন এ বিষয়ে ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এঁর সম্পর্কে নিচের কথাগুলো বিবেচনা করি-
1. জন্মের আগে বাবাকে এবং শিশুকালে মাকে হারিয়ে তিনি ইয়াতিম ও সম্পদহীন ছিলেন।
2. দুনিয়ার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি।
3. তিনি মানুষ ছিলেন। তাঁর সংসার ছিলো। তাঁর পিতা-মাতা, স্ত্রী ও সন্তানাদি ছিলো। অর্থাৎ তিনি আকাশের কোন দেবতা ছিলেন না যে তাঁর দ্বারা সব সম্ভব ছিলো। যদিও নবী হওয়ার কারণে মহান আল্লাহু তা’য়ালা প্রয়োজন অনুযায়ী তাঁকে কিছু স্পেশাল ক্ষমতা দান করেছিলেন। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে এটাতো সমুজ্জল দিবালোকের ন্যায় সত্যযে, তিনি মানুষ ছিলেন। আর মানুষ না হলে আমরা কিভাবে বিলিয়িন বিলিয়ন মুসলমান তাঁর শরীয়ত ও তরিকত পালন করি। অতএব তিনি মানুষ ছিলেন এবং মহাগ্রন্থ আলকোরানে তাঁকে মানুষ হিসেবেই বলা হয়েছে। তাই মানুষের সাথে ও তাঁর সাথে তুলনা আমরা করতে পারি এবং সিদ্ধান্তে উপনিত হতে পারিযে,তিনি কি আমাদের মতো সাধারণ মানুষ, না আল্লাহু তা’য়ালার নবী।
4. তৎকালিন সময়ের জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলোকে সমসাময়িক অন্যান্য জাতি গোষ্ঠি থেকে তাঁর স্ব-জাতি নিরক্ষর, অর্থহীন, অনগ্রসর ও অবহেলিত ছিলো।
উপরোক্ত এ চারটি বিষয় যে, তিনি ইয়াতিম ছিলেন, সম্পদহীন ছিলেন, তাঁর জাতি-গোষ্ঠি সম্পদহীন ছিলো, তিনি মানুষ ছিলেন, দুনিয়ার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি লেখা-পড়া করেননি, তৎকালিন সময়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানেরও তেমন কোন উন্নতি হয়নি; এ বিষয় গুলো নিয়ে এবার গবেষণা করি এবং ভাবতে থাকি স্বাভাবিক ভাবে এ শ্রেণীর একজন মানুষের দ্বারা তার জীবন সায়ান্বে কতটুকু প্রাপ্তি সম্ভব (?); যিনি রাজা হবেন, তিনি সাধারণত রাজপুত্র বা প্রভাবশালী হবেন, আর ইয়াতিম ও গরীব শ্রেণী অবহেলিত থাকবে এটিই যুক্তিযুক্ত এবং এ দুনিয়ার নিয়ম। আমাদের চারপাশে চোখমেলে তাকালে ও বিশ্বের অতীত ইতিহাস পর্জালোচনা করলে, সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া আমরা তো এটিই দেখতে পাই, তাই না? আর সেক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা:), তিনি কতটুকু প্রাপ্ত হলেন!। তাই সে আলোকে এবং যুক্তির বিচারে সিদ্ধান্তে উপনিত হই; তাঁর জীবনে যা অর্জিত হয়েছে তা কি আসলে স্বাভাবিক ছিলো (?), না এ ছিলো অলৌকিক (!) ও কোন মহাশক্তিধরের সরাসরি সাহায্যে (!!) এবং এ রকম মানুষ অতীতে ছিলো কিনা (?) ও পৃথিবীর এ পর্যন্ত কেউ হয়েছে কিনা (?) বা ভবিষ্যতে কেউ হতে পারে কিনা (?) (চলবে)
0 Comments