কবীরা গুনাহ সমূহের বিবরণ, পাঠ-১ (ধারাবাহিক)
এ প্রসঙ্গে প্রথমে জেনে নেয়া যাক, কবীরা গুনাহ কাকে বলে ও এর শ্রেণী
বিভাগ কী?
কবীরা গুনাহ ও এর প্রকারভেদ: যে সব কথা, কাজ, ব্যবহার, ইশারা-ইঙ্গিত ও সমর্থন এর বিষয়ে মহান আল্লাহু তা’য়ালা নিজে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন (স্বয়ং) ও আল হাদিসের মাধ্যমে [তথা রাসূলুল্লাহ (সা:) এর মাধ্যমে] নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন এবং গুনাহের তারতম্য বা অবস্থা অনুযায়ী যে গুলো করলে কঠিন শাস্তির ঘোষণা প্রদান করেছেন, এগুলোকে কবীরা গুনাহ বলে। সিহাহ্ সিত্তার বিভিন্ন হাদিস শরীফের মাধ্যমে এর প্রকার ভেদ সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) এর মতে কবীরা গুনাহ প্রায় সাতশ’টি। তবে ইন্তেকালের মুহূর্তে আজরাইলি ছকরাত আরম্ভ হওয়ার আগ পর্যন্ত, তওবার মতো তওবা করলে মহান প্রভূ তাঁর বান্দার যে কোন গুনাহ মাফির খোশখবরী দিয়েছেন। আবার বান্দা যতক্ষণ এ গুনাহ সমূহকে গুনাহ হিসেবে স্বীকার ও বিশ্বাস করবে এবং এ বিষয়ে বিনয়ী থাকবে ততক্ষণ এ গুনাহ সমূহ হয়ে গেলেও তার ঈমান ঠিক থাকবে; যদিও কঠিন শাস্তির উপযুক্ত হবে। তবে যখনই সে এ গুনাহ সমুহকে অস্বীকার করবে এবং গুনাহ হিসেবে মেনেই নেবে না, তখন তার আর ঈমান থাকবে না। এ অবস্থায় তার যখনই হুশ আসবে বা তিনি যখনই বুঝতে শিখবে, তৎক্ষণাত তওবা, এস্তেগফার করে কালিমা শরীফ পড়ে ঈমান দোহরাইতে হবে। নিম্নে আমি সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় এবং বাংলায় এর সংক্ষিপ্ত পরিচয় সহ কবীরা গুনাহ সমূহের প্রকার ভেদ ও গুনাহের গভীরতা সহ এর প্রতিফল তুলে ধরলাম।
1. শিরক বা আল্লাহু তা’য়লার সাথে অংশী সাব্যস্ত করা: কবীরা গুনাহ সমূহের মধ্যে সবচেয়ে জঘন্যতম হচ্ছে আল্লাহু তা’য়ালার সাথে শিরক বা অংশী সাব্যস্ত করা। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহু তা’য়ালা তাঁর সাথে (অপর) কাউকে অংশী সাব্যস্ত করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না (সূরা আন নিসা: 48)। অর্থাৎ জীবদ্দশায় তাওবা করে সংশোধিত হয়ে ইন্তেকাল না করলে, তবে মুমেনদের জন্য অন্যান্য যে কোন গুনাহ মহান রাব্বুল আলামিন নিজ গুনে ক্ষমা করে দিতে পারেন বা ক্ষমা করবেন, কিন্তু শিরিকের গুনাহ কখনোই মাফ করবেন না।
শিরক দু’প্রকার। যথা- ক) আকিদা বা বিশ্বাসগত শিরক। অর্থাৎ আল্লাহু তা’য়ালা ছাড়া তাঁরই সৃষ্ট অপর কিছুকে আল্লাহু তা’য়ালার সমতুল্য মনে করা এবং আল্লাহু তা’য়ালার অনুরুপ তারও উপাসনা করা। যেমন পাথর, বৃক্ষলতা, চন্দ্র, সূর্য, ফেরেশতা, নবী, ওলী, গ্রহ-নক্ষত্র, জ্বিন, দেবতা প্রভৃতি যাই হোক না কেন, তাকে আল্লাহু তা’য়ালার সমতুল্য ধারনা করা এবং তার পূজা-উপাসনা করা। এছাড়া আল্লাহু তা’য়ালার যে কোন গুণে অন্য যে কাউকে তাঁর সমতুল্য মনে করা। অর্থাৎ আল্লাহু তা’য়ালা এ কাজটি করেন, আবার এ লোকটিও বা এ দেবতাটিও বা এ সৃষ্ট পদার্থটিও এ কাজটি করেন বা করতে পারেন, এ ধরনের মনোভাব রাখা, এটিও শিরক। যেমন বাবার দরবারে গিয়ে অথবা কবরস্থ কোন ওলীর নিকট অনেকেই সন্তান চায়, সেজদা দেয় বা সন্তানের কান ফোঁড়িয়ে দিলে সে আর মরবে না , এ জাতীয় বিশ্বাস করে; যা কোরআন-হাদিসের কোথাও মহান রব বলেন নি। অথবা খাওয়ার-দাওয়ারই মানূষকে বাঁচিয়ে রাখে, মেঘ থেকেই বা মেঘ ধরলেই বৃষ্টি হয়; যেখানে মহান আল্লাহু তা’য়ালার কোন ভূমিকা নেই এবং এগুলো মহান আল্লাহু তা’য়ালা করেন না। ইত্যাদি, ইত্যাদি।
খ) রিয়া বা লোক দেখানোর জন্য নেক আমল করা। হাদিসে ইহাকে ছোট শিরক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ মসজিদে না গেলে, কুরবানী না দিলে, হজ্জ না করলে, রোজা না রাখলে, যাকাত না দিলে মানুষের কাছে, সমাজের কাছে আমি অসাম্মানিত হয়ে যাবো, আমার সম্মান থাকবে না বা বাড়বে না, লোকে আমাকে ভালো লোক বলবে না ইত্যাদি আশায় মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে নেক আমল করা। এছাড়া লোকের নিকট সম্মানের ভয়ে কোন নেক কাজ বর্জন করা; যেমন লোকে কী বলবে, লোকে পাগল বলবে, বুজর্গ বলবে ইত্যাদি কারণে কোন ভালো কাজ বর্জন করাও শ্রেণী ভেদে রিয়া বা গুপ্ত শিরিকের অন্তর্ভূক্ত।
2. কোন কুফরী কথা বলা বা কোন কূফরী কাজ করা বা এসবের প্রতি বিশ্বাস থাকা।
এ কথা বা কাজগুলো ঈমানের বিপরীত। যেগুলি বললে বা যে কাজগুলি করলে ঈমান থাকে না। বরং তওবা না করলে সে কাফের হয়ে যায়। যেমন-
1) ইসলামের পর্দার বিধান, ফরজ গোসল, ফরায়েজ, যাকাতের বিধান, ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে যদি কেউ ইসলামের নিন্দা করে এবং বলে যে বা মনে মনে পোষণ করে যে, ইসলামের চাইতে হিন্দু ধর্ম বা বোদ্ধ ধর্ম অনেক ভালো এবং এসব ধর্মের প্রশংসা করে (নাউজুবিল্লাহ)
2) মুসলমান হওয়ার পর আক্ষেপ করা যে, হায়! যদি মুসলমান না হতাম, তবে এ রকম উন্নতি লাভ করতে পারতাম বা এ রকম সম্মান পেতাম (নাউজুবিল্লাহে মিন যালিক)।
3) সন্তান বা অন্যকোন প্রিয়জনের মৃত্যূশোকে এ রকম কথা বলা যে, আল্লাহু তা’য়ালা মারার জন্য আর কাউকে পায় নাই, ইহাকেই পেয়েছিলো। এর জীবন নেয়াটাই আল্লাহু তা’য়ালার মাকছুদ ছিলো। আল্লাহু তা’য়ালার এ রকম করা ভালো হয় নাই বা উচিৎ ছিলো না, এ রকম ঝুলুম কেহ করে না ইত্যাদি।
4) আল্লাহু তা’য়ালার প্রতি বা রাসূলুল্লাহ (সা:) এর প্রতি বা ইসলামের কোন হুকুমের প্রতি মন্দ জানা বা তাতে কোন প্রকার দোষ বের করা।
5) ইসলামের কোন ফরজ হুকুমকে অস্বীকার করা যে, ইহা আমি জীবনেও মান্য করবো না। কারণ, ইহা ফরজ হতে পারে না। ফরজ হিসেবে এ কথা বা কর্মকে আমি মানি না।
6) কোন নবী বা ফেরেশতার উপর কোনরুপ দোষারোপ করা। কোন নবী বা ফেরেশতাকে ঘৃণা বা তুচ্ছ মনে করা।
7) কোন নবী-রাসূল বা ওলী-আল্লাহ বা পীর-বুজর্গ সম্ভন্ধে বিশ্বাস রাখা যে, নিশ্চয় তিনি সব সময় আমাদের সকল অবস্থা জানেন।
8) গণক কিংবা যার উপর জ্বীনের আছর হয়েছে, তার নিকট গায়েবের কথা জিজ্ঞাসা করা বা হাত ইত্যাদি দেখিয়ে ভাগ্য নির্ণয় করানো এবং এতে বিশ্বাস করা (ভবিষ্যতের বিষয়ে গণকের কথা অনুযায়ী দৃঢ় বিশ্বাস করা)। মনে রাখতে হবে, গায়েবের খবর (কুরআন ও হাদিসে যে সব গায়েবের খবর দেয়া হয়নি) একমাত্র আল্লাহু তা’য়ালা ব্যতিত কোন নবী-রাসূল, সাহাবায়ে কেরাম (রা:), পীর-বুজর্গ, ফেরেশতা বা জ্বীন জাতি কেহই জানে না; এ কথায় বিশ্বাস না করলে আপনার ঈমান থাকবে না। এছাড়া কোন বিজ্ঞানীও যদি বলে অমুক দিন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে বা অমুক দিন বৃষ্টি হবে বা হবে না বা খরা হবে। এ জাতীয় কথায় দৃঢ় বিশ্বাস করাও কূফরী। যা ঈমানের পরিপন্থী। তবে মেঘ দেখলে যেমন সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, শ্রেণীভেদে বিজ্ঞানীদের কথায় বা আবহাওয়া বার্তায় সতর্কতা অবলম্বন করা যাবে, কিন্তু পুরোপুরি বিশ্বাস স্থাপন করা যাবে না।
9) কোন জীবিত বা মৃত পীর-বুজর্গ বা নবী-রাসূল (আ:) কাকেও দূর হতে ডেকে মনে করা যে, তিনি আমার ডাক শুনেছেন বা তিনি অন্য জীব বা জড়ের মাধ্যমে বা নিরাকার ভাবে বাতাসের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসছেন এবং আমাদের সাথে আছেন।
10) আল্লাহু তা’য়ালা যেমন সর্বত্র বিরাজমান, সকল কিছু দেখেন শুনেন; তেমনি অন্য কোন নবী-রাসূল বা হযরত মুহাম্মদকে (সা:) সর্বত্র বিরাজমান মনে করা।
11) কোন পীর-বুজর্গ বা অন্য কাকেও লাভ-লোকসানের অধিকারী মনে করা। অর্থাৎ আপনাকে তিনি তার থেকে লাভ করিয়ে দিতে পারেন অথবা লোকসানে নিপতিত করতে পারেন ; মনে মনে এ জাতীয় বিশ্বাস স্থাপন করা।
12) আল্লাহু তা’য়ালা ব্যতীত অন্য কারো নিকট নিজের মকছুদ, টাকা-পয়সা, ধন-সম্পত্তি, রুজি-রোজগার, সন্তান ইত্যাদি চাওয়া (বিশেষ করে মাজারে বা পীর বুজর্গের কাছে গিয়ে অনেক মূর্খ লোককে এভাবে চাইতে দেখা যায়)।
13) কাকেও সেজদা করা। কারো নামে রোজা রাখা বা ইবাদতের নিয়তে কোন জীবিত বা মৃত ব্যক্তির নামে গরু ইত্যাদি ছেড়ে দেয়া বা দরগায়ে ঐ মৃত ব্যক্তির কাছ থেকে কিছু পাওয়ার উদ্দেশ্যে মান্নত মানা।
14) কোন কবর বা দরগাহ বা পীর -বুজর্গের ঘরের তাওয়াফ করা (অর্থাৎ ইবাদতের নিয়তে চতুর্দিকে ঘোরা)।
15) আল্লাহু তা’য়ালার হুকুম বা বিধানকে নিকৃষ্ট বা অসুম্পূর্ণ বা বা মানুষের জন্য ক্ষতিকর বা অনুপকারি মনে করে অন্য কারো হুকুমকে বা কোন রাজনৈতিক দলের মানব রচিত বিধানকে বা কোন দেশ-রেওয়াজ বা সামাজিক প্রথাকে বা নিজের কোন পুরাতন অভ্যাসকে বা বাপ-দাদার কালের কোন দস্তরকে উৎকৃষ্ট মনে করে পছন্দ বা অবলম্বন করা।
16) কারো সামনে সম্মানের জন্য (সালাম ইত্যাদি করার সময়) মাথা নোয়ান। আমাদের দেশে বিশেষ করে মহিলাগণ বা নব বধু বা নব বর কদমবুচি করার সময় যেভাবে মাথা নোয়ায়, ইহা একটি রুসূম। এ রুসূমের কথা এখানে লিখা হয়নি। তবে ইহাও হিন্দুয়ানি প্রথা এবং ইহাও নিন্দনীয় ও পরিত্যার্য। আবার যদি সত্যি সত্যি সম্মানার্থে মাথা নোয়ায়, তাহলে ইহাও অবশ্যই ঈমানের বিপরীত।
17) কারো নামে কোন জানোয়ার যবেহ্ করা এবং উপরি দৃষ্টি ছাড়াইবার জন্য তাদেরকে ভেট (নযরানা) দেয়া।
18) কারো নামে ছেলে-মেয়েদের নাক-কান ছিদ্র করা ও বালি, বোলাক ইত্যাদি পরানো বা কারো নামে বাজুতে পয়সা বা গলায় সুতা বাঁধা এবং এ বিশ্বাস রাখা যে, শিশু বয়সে এ ছেলে/ এ মেয়ে আর মরবে না।
19) পৃথিবীতে যা কিছু হয়, নক্ষত্রের তাছিরে হয়; আল্লাহু তা’য়ালার হুকুমে নয়, ইহা বিশ্বাস করা।
20) ভবিষ্যত সংক্রান্ত কোন অনুমান বা লক্ষণ বা গবেষণাকে সত্য মনে করা যে, আগামীকাল বৃষ্টি হবে বা আগামী মাসে প্রচন্ড তাপদাহ হবে বা এ মাসে কোন বৃষ্টি হবে না বা আগামী মাসের কোন একদিন বা সহসা বা অচিরেই অমুক গ্রহের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। ইত্যাদি।
21) হযরত মুহাম্মদকে (সা:) শেষ নবী হিসেবে না মানা।
22) নবী-রাসূলগণকে (আ:) বে-গুণাহ ও নিষ্পাপ হিসেবে এবং সত্যের মাপকাঠি হিসেবে না মানা।
23) এ কথায় বিশ্বাস করা যে, ইসলামের নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সা:) মানুষ নয়; তিনি নূরের তৈরী মানুষ রুপি অন্য কিছু।
24) এ কথা বলা যে, হযরত মুহাম্মদ (সা:) কামুক (নাউজুবিল্লাহ!)। তা না হলে তিনি এত বিয়ে কেন করেছেন (আসতাগফিরুল্লাহ!)।
25) কোরআন ও হাদিছ দ্বারা প্রমাণিত এবং ইসলামে স্বীকৃত নির্দিষ্টকৃত কোন হালালকে জেনে-বুঝে ইচ্ছাপূর্বক এবং মনগড়া ভাবে হারাম জানা বা কোন পাক জিনিসকে ইচ্ছাপূর্বক নাপাক জানা অথবা একই ভাবে কোন হারামকে হালাল জানা বা কোন নাপাক বিষয়কে পাক জানা অথবা হালাল, হারাম, পাক, নাপাক এগুলোকে যার যার স্থানে শুধুমাত্র নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী মানতে অস্বীকার করা। ( এ বিষয়গুলো ইসলাম শিক্ষা বা এ জাতীয় বই থেকে কোন ভালো আলেমের তত্ত্বাবধানে থেকে শিখে নিতে হবে এবং আমি নিজেও পরবর্তীতে এ বিষয়ক প্রবন্ধ লিখবো ও ভিডিও আপলোড করবো। আশা করি সে পর্যন্ত আমার সাথেই থাকবেন)
26) ইহা বিশ্বাস করা যে, মানুষের জীবনে যা কিছু ঘটছে বা ঘটবে অর্থাৎ ভালো-মন্দ, উন্নতি-অবনতি, সুস্থতা-অসুস্থতা ইত্যাদি সবই মানুষের এখতিয়ার বা ইচ্ছা বা চেষ্টা বা অংশগ্রহণ ব্যতিতই মহান আল্লাহু তা’য়ালা সম্পন্ন করেন। অর্থাৎ এখানে মানুষের কোন এখতিয়ার নেই এ ধরনের বিশ্বাস রাখা। অথবা ইহা বিশ্বাস করা যে, মানুষের জীবনে যা কিছু ঘটছে বা ঘটবে, তার সব কিছু শুধু মানুষেরই চেষ্টায় অর্জিত বা যে কেউ ইচ্ছা ও চেষ্টা করলেই সে নির্দিষ্ট কর্মফল পাবে। অর্থাৎ মানুষই তার আপন ভাগ্যের নির্মাতা। আল্লাহু তা’য়ালার এতে কিছু করার নেই। এ রকম বিশ্বাস রাখা। মনে রাখতে হবে এ দু’দলের কারোরই ইসলামে কোন অংশ নেই। বস্তুত, মানুষ আল্লাহু তা'য়ালার তাওফিকে এবং তাঁরই শক্তিতে ভালো-মন্দ বিচার করতে পারে এবং ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোন একটি কাজ সম্পন্ন করতে চেষ্টা-সাধনা করতে পারে। আর আল্লাহু তা’য়ালা মানুষ দ্বারাই তা সমাধা করেন এবং মানুষের নিয়ত অনুযায়ী এর কর্মফল প্রদান করেন। তবে কে চেষ্টা করবেন, আর কে চেষ্টা- সাধনা করবেন না, তা মহান রব মানুষের জন্মের অনেক আগ থেকেই জানেন, যেমনটি ঠুনকো যুক্তি হলেও শুধু বোঝার সুবিধার্থে বলছি, যেমন একজন টিচার তার ছাত্র সম্ভন্ধে ছাত্রের পরীক্ষার অনেক পূর্ব থেকেই একটা ধারনা রাখতে পারেন (আর মহান আল্লাহু তা’য়ালাতো আলেমুল গায়েব ও সর্ব জ্ঞানের আধার) এবং সেভাবেই মানুষের ভাগ্যলিপি লিপিবদ্ধ থাকে , যার পরিবর্তন হওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ চেষ্টা-তদবীর-সাধনা দ্বারা মানুষ কতটুকু উন্নতি করবেন বা করতে পারবেন, তা মহান রব পূর্ব থেকেই জানেন। আর এভাবেই মানুষের ভাগ্যলিপি নির্দিষ্ট। পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকে পৃথিবী ধ্বংস এবং এর পর বেশেত-দোযখ ইত্যাদি সকল প্রাণ ও জড়ের সকল একটিভিটিজ এর যাবতীয় জ্ঞান মহান রবের পূর্ব থেকেই জানা। এ রকম আকিদা-বিশ্বাস প্রত্যেক মুসলমানের থাকতে হবে। আর এর বিপরীত বিশ্বাসীদের ঈমান থাকবে না। (চলবে)
0 Comments